Gabtoli, Bogura.
College Code: 4328 College EIIN: 119547
জনাব মো: হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাহজাহানপুর) সংসদীয় আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও গাবতলী মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবে তিনি দলের নীতি ও কার্যক্রম পরিচালনায় অবদান রেখে চলেছেন। পাশাপাশি তিনি বিএনপি’র মাননীয় চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এবং কৃষকদল কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর নেতৃত্বগুণ, দূরদৃষ্টি এবং শিক্ষানুরাগ গাবতলী মহিলা কলেজসহ এ অঞ্চলের শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ব্যাক্তিগত পরিচয় : জনাব মো: হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম ও প্রতিথযশা রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। তাঁর পিতা ছিলেন মরহুম সিরাজুল হক তালুকদার এবং মাতা ছিলেন মরহুম হায়াতুন্নেছা। ১৯৫৩ সালে তিনি বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলার বালিয়াদিঘী ইউনিয়নের কলাকোপা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা-মাতার পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন পঞ্চম সন্তান। তাঁর পিতা, মরহুম সিরাজুল হক তালুকদার, ছিলেন এক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন জননেতা ও সমাজসেবক। তিনি ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে ২৩ বছর বালিয়াদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ১৯৬২ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত তিনি প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ছিলেন এবং ১৯৭৯ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, সৎ নেতৃত্ব ও জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড এ অঞ্চলের মানুষের হৃদয়ে আজও গভীরভাবে স্মরণীয় হয়ে আছে। শিক্ষা জীবন : কলাকোপা-গাবতলীর গর্বিত সন্তান জনাব মো: হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন বিভাগের মেধাবী ছাত্র। তবে পারিবারিক কারণে তিনি শেষ পর্যন্ত উচ্চতর শিক্ষা সম্পন্ন করতে পারেননি। তাঁর শিক্ষাজীবনের সূচনা হয় বগুড়া মিশন স্কুলে, যেখানে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে তিনি বগুড়া জেলা স্কুলে ভর্তি হয়ে সেখান থেকেই মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে তিনি ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজে ভর্তি হয়ে কৃতিত্বের সাথে এই স্তর পাস করেন এবং পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তাঁর উচ্চশিক্ষার পথচলা শুরু হয়। রাজনৈতিক জীবন : নিভৃত পল্লীগ্রাম কলাকোপায় বেড়ে ওঠা এই কৃতি সন্তান ১৯৯১ থেকে ২০০6 সাল পর্যন্ত একটানা ১৫ বছর বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে তিনি জাতীয় সংসদের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন এবং শিক্ষা খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। রাজনীতির প্রতি তাঁর আগ্রহের সূচনা ঘটে স্কুল জীবনেই, আইয়ুববিরোধী গণআন্দোলনের মাধ্যমে, যখন তিনি ছাত্র ইউনিয়নের ব্যানারে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। সরকারি তিতুমীর কলেজে অধ্যয়নকালে ছাত্র ইউনিয়নের সাথে যুক্ত থাকাকালীন সময়ে, পিতার হাত ধরে তিনি জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। পিতার মৃত্যুর পর, ১৯৮১ সালে, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন এবং অল্প সময়ের মধ্যেই নিজেকে এক প্রতিশ্রুতিশীল রাজনৈতিক নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, গাবতলী উপজেলার মা, মাটি ও মানুষের অকৃত্রিম নেতা জনাব মো: হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯২ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি গাবতলী উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সাল থেকে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে দলের নীতি নির্ধারণ ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে যুক্ত আছেন। ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০০৮ সাল থেকে বিএনপি’র মাননীয় চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পদে আছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কৃষি ও কৃষক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বগুণ, সাংগঠনিক দক্ষতা এবং জনকল্যাণমূলক দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে এ অঞ্চলের মানুষের কাছে এক বিশ্বাসযোগ্য ও শ্রদ্ধার পাত্রে পরিণত করেছে। গাবতলী মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট : গাবতলী উপজেলা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা, বিশেষত নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে ছিল পশ্চাৎপদ ও অবহেলিত। এ বাস্তবতা গভীরভাবে উপলব্ধি করে জনাব মো: হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু নারীর শিক্ষা উন্নয়নে নিজেকে উৎসর্গ করার সংকল্প গ্রহণ করেন। “নারী শিক্ষা উন্নয়নে প্রতিশ্রুতবদ্ধ”-এই স্লোগানকে হৃদয়ে ধারণ করে তিনি ১৯৯৯ সালে গাবতলী পৌরসভার অন্তর্গত মনোরম পরিবেশে গাবতলী মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। শুধু এই কলেজ প্রতিষ্ঠাতেই তিনি থেমে থাকেননি। এ অঞ্চলের সামগ্রিক অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি তিনি শিক্ষা, সমাজ ও সংস্কৃতির প্রসারে অসামান্য ভূমিকা রাখেন। তাঁর উদ্যোগে ও সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয় একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (তরুনিহাট কলেজ, দুর্গাহাটা কলেজ, বাগবাড়ী শহীদ জিয়া ডিগ্রি কলেজ)-সহ বহু মাদ্রাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এছাড়া তিনি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথেও নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত থেকে সমাজের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছেন।